দেহের প্রতিরক্ষায় স্মৃতিকোষের ভূমিকা(Role of Memory Cell in Immune System):
দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় স্মৃতিকোষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো অ্যান্টিজেনকে চিহ্নিত ও মোকাবিলা করে। স্মৃতিকোষ হচ্ছে লিম্ফোসাইট নামক অদানাদার শ্বেত রক্তকণিকা লিম্ফোসাইট দুধরনের:
*T লিম্ফোসাইট ও
* B লিম্ফোসাইট।
T-লিম্ফোসাইট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে এবং জীবাণুকে সরাসরি আক্রমণ করে। অন্যদিকে, B-লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে যা জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংস করে। এসব কোষ অস্থিমজ্জায় স্টেমকোষ (stem cell) থেকে সৃষ্টি হয় এবং লসিকা বাহিকার মাধ্যমে থাইমাস, লসিকা পর্ব, প্লীহা ও হৃৎপিণ্ডের কাছাকাছি রক্ত সংবহতন্ত্রে পৌঁছে পরিণত হয়।
স্মৃতিকোষের (memory T-cell memory B-cell) প্রধান ভূমিকা হচ্ছে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করে অনুপ্রবেশিত জীবাণুর বিরুদ্ধে দেহকে অনাক্রম্য করে তোলা। এভাবে গড়ে উঠে অর্জিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। প্রথমবার কোনো জীবাণু দেহে সংক্রমণ ঘটালে দেহ তার বিরুদ্ধে সাড়া দিয়ে যেভাবে রোগমুক্ত হয় তাকে প্রাইমারি সাড়া (primary response) বলে। আবারও যদি ঐ জীবাণু আক্রমণ করে তখন স্মৃতিকোষগুলো প্রাইমারি সাড়ার স্মৃতিকথা মনে করে দ্রুততর সাড়া দিয়ে দেহকে রোগমুক্ত রাখে। দ্বিতীয়বারের সাড়াকে সেকেন্ডারি সাড়া (secondary response) বলে। সেকেন্ডারি সাড়ার কারণে আমরা প্রথম একবার ঘটে যাওয়া সংক্রমণ আর তেমন টের পাই না, কিংবা একেবারেই টের পাই না।
দ্বিতীয়বার কোনো জীবাণুর প্রবেশ ঘটলে স্মৃতি T-কোষ আর স্বাভাবিক না থেকে অতিদ্রুত বিপুল সংখ্যক ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের T লিম্ফোসাইট সৃষ্টি করে জীবাণু ধ্বংসে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যদিকে, স্মৃতি B-কোষ মানবদেহের রক্তপ্রবাহে দীর্ঘদিন অতন্দ্র প্রহরীর মতো সতর্ক থাকে। এ কোষ স্বাভাবিক অবস্থায় অ্যান্টিবডি ক্ষরণ করে না কিন্তু সেকেন্ডারি সাড়ায় অ্যান্টিবডি ক্ষরণকারী বিপুল সংখ্যক কোষ সৃষ্টি করে দেহকে রোগমুক্ত রেখে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।